ডিজেল ইঞ্জিন কোন ধরনের ইঞ্জিন? কিভাবে কাজ করে?
ডিজেল ইঞ্জিন, রুডলফ ডিজেলের নামানুসারে, একটি অভ্যন্তরীণ দহন ইঞ্জিন, যেখানে যান্ত্রিক সংকোচনের কারণে সিলিন্ডারে বাতাসের উচ্চ তাপমাত্রার কারণে জ্বালানীর ইগনিশন হয়; এইভাবে, ডিজেল ইঞ্জিন একটি তথাকথিত কম্প্রেশন-ইগনিশন ইঞ্জিন (CI ইঞ্জিন)। এটি বায়ু-জ্বালানী মিশ্রণের স্পার্ক প্লাগ-ইগনিশন ব্যবহার করে ইঞ্জিনের সাথে বৈপরীত্য, যেমন একটি পেট্রোল ইঞ্জিন (পেট্রোল ইঞ্জিন) বা একটি গ্যাস ইঞ্জিন (প্রাকৃতিক গ্যাস বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের মতো বায়বীয় জ্বালানি ব্যবহার করে)।
ডিজেল ইঞ্জিনগুলি শুধুমাত্র বায়ু, বা বায়ু এবং নিষ্কাশন থেকে অবশিষ্ট দহন গ্যাসগুলিকে সংকুচিত করে কাজ করে (এক্সস্ট গ্যাস রিসার্কুলেশন (EGR) নামে পরিচিত)। ইনটেক স্ট্রোকের সময় বায়ু চেম্বারে প্রবেশ করা হয় এবং কম্প্রেশন স্ট্রোকের সময় সংকুচিত হয়। এটি সিলিন্ডারের অভ্যন্তরে বাতাসের তাপমাত্রা এত বেশি মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে দহন চেম্বারে ইনজেকশনের পরমাণুযুক্ত ডিজেল জ্বালানী জ্বলে ওঠে। জ্বলনের ঠিক আগে বাতাসে জ্বালানি প্রবেশ করানো হলে, জ্বালানির বিচ্ছুরণ অসম হয়; একে বলা হয় ভিন্নধর্মী বায়ু-জ্বালানির মিশ্রণ।
একটি ডিজেল ইঞ্জিন যে টর্ক উৎপন্ন করে তা বায়ু-জ্বালানী অনুপাত (λ) পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রিত হয়; ইনটেক এয়ার থ্রোটলিং এর পরিবর্তে, ডিজেল ইঞ্জিন ইনজেকশন করা জ্বালানীর পরিমাণ পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে এবং বায়ু-জ্বালানির অনুপাত সাধারণত বেশি থাকে।
ডিজেল ইঞ্জিন এবং পেট্রোল ইঞ্জিন দৃশ্যত পার্থক্য
পেট্রোল ও ডিজেল ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য:
ইঞ্জিন একটি গাড়ির অংশ যা জ্বালানী পোড়ায় এবং এটিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। পেট্রোল ও ডিজেল ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
১। পেট্রোল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার হয়। অন্যদিকে, ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।
২। পেট্রোল ইঞ্জিনে স্পার্ক করে ইগ্নিশন করা হয়। অন্যদিকে, ডিজেল ইঞ্জিনে কমপ্রেশন করে ইগনিশন করা হয়।
৩। পেট্রোল ইঞ্জিনে কার্বুরেটর থাকে। অন্যদিকে, ডিজেল ইঞ্জিনে কার্বুরেটরের স্থলে ইনজেক্টর থাকে।
৪। পেট্রোল ইঞ্জিন অটো সাইকেলে কাজ করে। অন্যদিকে, ডিজেল ইঞ্জিন ডিজেল সাইকেলে কাজ করে।
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডিজেল ইঞ্জিন কোনটি ও কেন?
প্রশ্নটিতে capacity range বলা হয়নি তাই ধরে নিলাম এখানে কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই ।সেক্ষেত্রে 2015 সালে বাজারে আসা Wärtsilä 31 এন্জিনটিকেই আমি অনুমোদন করব যেটি তৈরী করেছে Wärtsilä Energy group ।Guinness World Records এটিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ efficiency সমন্বিত 4-stroke diesel engine এর স্বীকৃতি দিয়েছে।একই কারনে এর economic fuel consumption এটিকে ন্যুনতম কার্বন নির্গমনের এন্জিনগুলির মধ্যে চিহ্নিত করে যা আজকের পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ন ।
এর DF Version টি বিরাট Range এর জ্বালানি ব্যবহার করতে পারে যা হল প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিভিন্ন রকমের ডিজেল ৷ এর জন্য এটি ছোট বড় বিভিন্ন capacityর জাহাজ বা ফেরীর জন্য উপযোগী ৷ এর শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা 4.6 to 12 MW with 600 kW/cylinder at 750 rpm, and 580 kW/cylinder at 720 rpm ।
সবচেয়ে আকর্ষনীয় ব্যাপারটি হল,এই এঞ্জিনে চালিত একটি মাঝারী সাইজের ফেরী জাহাজের কার্বন নির্গমন বছরে মাত্র 750 টন ।
ডিজেল ইঞ্জিনে বুশিং কী?
এটি এক মূল্যবান বিষয়। ডিজেল ইঞ্জিনকে বুশিং কী ঘলে পুরনানী দরকার। ডিজেল ইঞ্জিন বুশিং কী ঘলে বাঘা দেয়। তা ইঞ্জিনকে বুমিং, এবং কী ঘলে ক্ষতি করে।
ডিজেল ইঞ্জিন বুশিং কী ঘল হচ্ছে স্পিল ঘল, বা ইথানল। যদি ডিজেল ইঞ্জিনে বুশিং কী ঘল তুলে নেয়া হয়, তাহলে ইজান দিয়ে গাড়ি চলানো সম্ভব হবে না। বিনা বুশিং কী ঘল ডিজেল ইঞ্জিন চালনা করা যাবে না।
সুতরাং, ডিজেল ইঞ্জিনের সুচারু চালনা এবং উন্নত কার্যক্ষমতার জন্য বুশিং কী ঘল ব্যবহার অতি গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজেল ইঞ্জিনের নক ও ডেটোনেশন বলতে কী বোঝায় ?
প্রথমেই বলে রাখি, নক শব্দটি দ্বারা ডিজেল ইঞ্জিনের ত্রুটিপূর্ন প্রজ্জ্বলন প্রক্রিয়ার ফলে যে ধাতব শব্দ শোনা যায়, তাকে বুঝায়। আর ডেটোনেশন শব্দটি পেট্রোল ইঞ্জিনের ত্রুটিপূর্ন দহনের ফলে সৃষ্ট শব্দকে বুঝায়। অর্থাৎ নক শব্দটি ডিজেল ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে এবং ডেটোনেশন শব্দটি পেট্রোল ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ডিজেল নকঃ ডিজেল ইঞ্জিনের ডিলে পিরিয়ড বা গনিশন ডিলে যদি কম হয় ততবে জ্বালানির দহন শুরু হওয়ার পূর্বে অল্প পরিমাণ দহন প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে, ফলে জ্বালানি দহন মসৃন হয়। কিন্তু ডিলে পিরিয়ড বেশি হলে জ্বালানির প্রথম কনা দহনের দহনের পূর্বে অনেক পরিমান জ্বালানি দহন প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে এবং দহন হয় অত্যন্ত প্রচন্ডবেগে। এতে দহন প্রকোষ্ঠে (এই অনিয়ন্ত্রিত দহনের কারনে) চাপ হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়ে একটি অভিঘাত তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। যখন এ অভিঘাত তরঙ্গ সিলিন্ডার হেড বা পিস্টন ক্রাউনের ধাতব অংশে আঘাত করে তখন একটি ধাতব শব্দ শেনা যায়, যা ডিজেল নক নামে পরিচিত। এি নকের ফলে তেমন বেশি ক্ষতি হয়না কেননা এর প্রভাবে শক্তি তেমন একটা হ্রাস পায়না, সিলিন্ডার অতি উত্তপ্ত হয়না এবং এগজস্ট ভালভ কেও পোড়ায়না।
মূল কারনঃ
- ডিজেল জ্বালানির সিটেন নম্বর কম।
- সংকোচন অনুপাত কম হওয়া।
- ইনটেক এয়ারের তাপমাত্রা কম হওয়া।
- ডিলে পিরিয়ড বেশি হওয়া।
প্রতিকারঃ ডিজেল ইঞ্জিনে অধিক সিটেন যুক্ত জ্বালানি ব্যাবহার করলে ডিজেল নক কম হয়। কম সিটেন যুক্ত ডিজেল ফুয়েলে সামান্য পরিমান ইথাইল নাইট্রেট, আমাইল থায়ো নাইট্রেট যোগ করে সিটেন নম্বর বাড়ানো যায়।দহন প্রকোষ্ঠে কার্বন জমতে না দেয় বা নিয়মিত পরিষ্কার করা, ইত্যাদি।
যেহেতু ডেটোনেশন ডিজেল ইঞ্জিনের সাথে সম্পৃক্ত না, তাই সে সম্পর্কে কিছু লিখলাম না। তবে কেউ কেউ ডেটোনেশন এর দ্বারা পুরো ইঞ্জিনের নড়াচড়া জনিত বিশেষ শব্দ কে বুঝায়, যেটাকে নক এর ফল বলে ধরে নেয়া হয়। বস্তুত এটি পেট্রোল ইঞ্জিনের ক্ষেত্রেই অধিক মানানসই।
ডিজেল ইঞ্জিনগুলি কেন পেট্রোল ইঞ্জিনের চেয়ে বড়?
পেট্রোল ইঞ্জিন থেকে আমরা প্রতি গ্যালন পেট্রোল খরচ করে ১১৫০০০ বি.টি.ইউ. পরিমাণ শক্তি পেয়ে থাকি, অপর দিকে ডিজেল ইঞ্জিনে প্রতি গ্যালন ডিজেল খরচ করে পাই ১৩১৩০০ বি.টি.ইউ. পরিমাণ শক্তি। তাহলে, ডিজেল ইঞ্জিন থেকে আমরা পেট্রোল ইঞ্জিন থেকে শক্তি বেশি পাচ্ছি।
ডিজেল ইঞ্জিনে কোনো স্পার্ক প্লাগ থাকেনা। কারণ ডিজেল ইঞ্জিন সঙ্কোচনের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করে। অপর দিকে পেট্রোল ইঞ্জিন স্পার্ক প্লাগের মাধ্যমে আগুনের ফুলকি তৈরি করে এবং তা থেকে তাপ উৎপন্ন হয়। এই কারণে ডিজেল ইঞ্জিনের সংকোচন অনুপাত পেট্রোল ইঞ্জিনের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
সঙ্কোচন অনুপাত মানে হলো, সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ আয়তন এবং সর্বনিম্ন আয়তনের অনুপাত।
ডিজেল ইঞ্জিনের সংকোচন অনুপাত হল ১৫-২০ যখন পেট্রোল ইঞ্জিনের সংকোচন অনুপাত ৮-১০।
সংকোচন অনুপাত বাড়াতে হলে ইঞ্জিনের আকার ও বড় করতে হয়।
তাই ডিজেল ইঞ্জিন পেট্রোল ইঞ্জিনের তুলনায় বড় হয়ে থাকে।
ডিজেল ইঞ্জিনের সুবিধা
অন্যান্য ইঞ্জিন গুলোর তুলনায় ডিজেল ইঞ্জিনে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন-
- ডিজেল ইঞ্জিল গুলোর জ্বালানি দক্ষতা অনেকটাই বেশি হয়।
- ডিজেল ইঞ্জিনের কম্প্রেশন অনুপাত বেশি এবং অধিক তাপশক্তি উৎপাদন করতে পারে।
- পরিচালনার ক্ষেত্রেও গাড়িতে ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার অনেকটাই সহজ।
- দূরপাল্লার বাহনগুলো যেমন- বাস, ট্রাক এর জন্য এটি খুবই উপযোগী এবং দ্রুত কাজ করে।
- ডিজেল ইঞ্জিন সাধারণ ইঞ্জিনের তুলনায় অনেক বেশী চাপ সহ্য করতে পারে।
- এর স্থায়িত্ব দীর্ঘদিন টেকসই হয় এবং তেমন সার্ভিসিং এর প্রয়োজন হয় না।
- ডিজেল ইঞ্জিন পরিবেশ দূষণ রোধ করে। এর নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো এবং কম পরিবেশ দূষক নির্গত করে।
- বিভিন্ন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলে ডিজিটাল জ্বালানি গ্যাসোলিনের তুলনায় কম দাহ্য পদার্থ। ফলে আগুনের দূর্ঘটনায় ডিজেল ইঞ্জিন নিরাপদ।