শীতের সকাল অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল নিয়ে বাংলা অনুচ্ছেদ লিখ।
অনুচ্ছেদঃ শীতের সকাল কুয়াশার আস্তরণ আর কাদা ধূলিহীন পরিবেশকে সঙ্গী করে মনোরম হয়ে ওঠে। যখন এই কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে চতুর্দিকে রূপালি আলো ছড়িয়ে পড়ে তখন বাড়িঘর, গাছপালা, মাঠ কানন, প্রান্তর প্রকৃতিপুঞ্জ ঝলমল করে ওঠে। অন্যান্য ঋতুর বেলায় যে উদ্দামতা শীতের সকালে তা অনুপস্থিত। তবে নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে শীতের সকালে।
শীতের সকাল অনুচ্ছেদ ২
আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু বিরাজমান। তন্মধ্যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল শীতকাল। ঋতুচক্রের আবর্তে বাংলাদেশে শীত আসে। হেমন্তের ফসল ভরা মাঠ যখন শূন্য ও রিক্ত হয়ে পড়ে, তখনই বােঝা যায়, ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শীত আসছে।উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে হাড়ে কাপন লাগিয়ে সে আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। প্রকৃতি তখন তার সমস্ত আবরণ খুলে ধারণ করে দীনহীন বেশ। প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য পূর্ণতা পায় শীত সকালে। শীতের সকালে সর্বত্র ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে। সর্বত্র বিরাজ করে কনকনে ঠাণ্ডা। মাঝে মাঝে ফুয়াশা এতই ঘন থাকে যে, সূর্যরশ্মিও একে ভেদ করতে পারে না। সবকিছু ঝাপসা দেখায়। দূরের জিনিস কদাচিৎ দেখা যায়। সূর্ণ বিলম্বে উঠে বলে মনে হয়। শিশু এবং বৃদ্ধরা সকালে হাড় কাঁপানাে শীতকে ভয় পায়। খুব সকালের ঠাণ্ডা এড়াতে তারা কিছুটা দেরিতে ঘুম থেকে উঠে। সকালে সূর্য যখন উকি দেয় গাছ ও ঘাসের উপর তখন রাতের ঝরা শিশির সােনার মতাে জ্বলল করতে থাকে। শীতের সকালের এক অসাধারণ আকর্ষণ সরষে ফুলের হলুদ মাঠ। সকালের সূর্যালােক যেন তার নিপুণ হাতে প্রতিটি সরষে গাছকে নবরূপে ঢেলে সাজায়। পশু-পাখি সূর্যের আলাে দেখে আনন্দিত হয়। কৃষকরা গরু ও লাঙল নিয়ে মাঠে যায়। তাদের হাতে শােভা পায় তুঙ্কা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সূর্যের মুখ দেখার জন্য বারবার জানালার ফাঁকে উঁকি মারে। কোথাও বা ছেলেমেয়েরা খড় সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করে, আর হাসি-তামাশায় মেতে উঠে। বৃদ্ধ লােকেরা রোদ পােহায়। কিছু লােক খেজুরের রস বিক্রি করতে বের হয়। অনেকেই ঘরে তৈরি পিঠা ও খেজুরের রস খেতে পছন্দ করে। বেলা বেশি হওয়ার সাথে সাথে শীতের সকালের দৃশ্য ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। বেলা বেড়ে চলে, কুয়াশা দূরীভূত হয় এবং লােকেরা তাদের নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
শীতের সকাল অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো
ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশের ছয় ঋতুর মধ্যে হেমন্তের পর আর বসন্তের আগে শীতের অবস্থান। গাছের ঝরা পাতায় নূপুর বাজিয়ে তার আগমন এবং বসন্তের নতুন পাতা জাগিয়ে তার অন্তর্ধান। তখন শীতের সকাল সম্পূর্ণভাবে প্রকৃতির এক ভিন্ন রূপ ধারণ করে, গাম্ভীর্যময় এক মহিমা নিয়ে। শীতের সকাল কুয়াশার আস্তরণ আর কাদা ধূলিহীন পরিবেশকে সঙ্গী করে মনোরম হয়ে ওঠে। যখন এই কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে চতুর্দিকে রূপালি আলো ছড়িয়ে পড়ে তখন বাড়িঘর, গাছপালা, মাঠ কানন, প্রান্তর প্রকৃতিপুঞ্জ ঝলমল করে ওঠে। অন্যান্য ঋতুর বেলায় যে উদ্দামতা শীতের সকালে তা অনুপস্থিত। তবে নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে শীতের সকালে। এই আনন্দ চারপাশে উৎসবের সমারোহ তৈরি করলেও শীতের সকালে মানুষ লেপ-কাঁথার নিচেই কাটাতে ভালোবাসে। শীতের সকাল আলস্য আর উৎসবের আমেজে উপভোগ্য হলেও দরিদ্রের জন্য তা কষ্টের। সূর্যকিরণের তীব্রতা বাড়লে দূর হয় শীতের সকালের আমেজ। তবু শীতের সকাল প্রকৃতিকে নিরাভরণ করে এক পবিত্র সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে যা ছড়িয়ে থাকে সারাবেলা।